ব্যবসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ৬টি মার্জিনের আলোচনা
ব্যবসার জন্য ৬টি মার্জিনের আলোচনা
মার্জিন হলো একটি আর্থিক সূচক যা ব্যবসার লাভের পরিমাণ এবং রাজস্বের মধ্যে সম্পর্ক বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত একটি শতাংশ আকারে প্রকাশ করা হয় এবং বিভিন্ন ধরনের খরচ বাদ দেওয়ার পরে যে লাভ বা উপার্জন বাকি থাকে তা পরিমাপ করে। মার্জিনের মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যবসার কার্যকারিতা এবং লাভজনকতা বোঝা।
১. গ্রস মার্জিন
মার্জিনের অর্থ: গ্রস মার্জিন হল বিক্রির পর লাভের শতাংশ যা কোম্পানি একটি পণ্য বা পরিষেবা বিক্রি করার পরে পায়।
উদাহরণ: একটি কোম্পানি ১০০,০০০ টাকা রাজস্ব অর্জন করেছে এবং এর কস্ট অফ গুডস সোল্ড (COGS) ৬০,০০০ টাকা।
হিসাব: গ্রস মার্জিন = (রাজস্ব - COGS) / রাজস্ব = (১০০,০০০ - ৬০,০০০) / ১০০,০০০ = ৪০%
আলোচনা: এটি নির্দেশ করে যে বিক্রির পরে কোম্পানির ৪০% লাভ রয়েছে, যা কোম্পানির লাভজনকতা এবং কার্যকারিতা বোঝাতে সহায়ক।
২. অপারেটিং মার্জিন
মার্জিনের অর্থ: অপারেটিং মার্জিন হল সেই লাভের শতাংশ যা কোম্পানি তার কস্ট অফ গুডস এবং অপারেটিং খরচ বাদ দেওয়ার পরে পায়।
উদাহরণ: একটি কোম্পানির গ্রস প্রফিট ৪০,০০০ টাকা এবং অপারেটিং খরচ ২০,০০০ টাকা।
হিসাব: অপারেটিং মার্জিন = (গ্রস প্রফিট - অপারেটিং খরচ) / রাজস্ব = (৪০,০০০ - ২০,০০০) / ১০০,০০০ = ২০%
আলোচনা: অপারেটিং মার্জিন ২০% নির্দেশ করে যে অপারেটিং খরচ বাদ দেওয়ার পরে কোম্পানি ২০% লাভ অর্জন করেছে।
৩. নেট মার্জিন
মার্জিনের অর্থ: নেট মার্জিন হল কোম্পানির মোট লাভের শতাংশ, যা সমস্ত খরচ বাদ দেওয়ার পরে নির্ধারিত হয়।
উদাহরণ: কোম্পানির নেট ইনকাম ১৫,০০০ টাকা এবং রাজস্ব ১০০,০০০ টাকা।
হিসাব: নেট মার্জিন = নেট আয় / রাজস্ব = ১৫,০০০ / ১০০,০০০ = ১৫%
আলোচনা: নেট মার্জিন ১৫% জানাচ্ছে যে কোম্পানি সমস্ত খরচ বাদ দেওয়ার পরে ১৫% লাভ অর্জন করেছে।
৪. EBITDA মার্জিন
মার্জিনের অর্থ: EBITDA মার্জিন হল প্রতিটি ডলারের রাজস্বের জন্য উৎপন্ন EBITDA এর শতাংশ।
উদাহরণ: কোম্পানির EBITDA ২৫,০০০ টাকা এবং রাজস্ব ১০০,০০০ টাকা।
হিসাব: EBITDA মার্জিন = EBITDA / রাজস্ব = ২৫,০০০ / ১০০,০০০ = ২৫%
আলোচনা: EBITDA মার্জিন ২৫% নির্দেশ করে যে প্রতিটি ১০০ টাকা রাজস্বে ২৫ টাকা EBITDA তৈরি হয়েছে।
৫. কন্ট্রিবিউশন মার্জিন
মার্জিনের অর্থ: কন্ট্রিবিউশন মার্জিন হল লাভের শতাংশ যা সমস্ত ভেরিয়েবল খরচ বাদ দেওয়ার পরে বাকি থাকে।
উদাহরণ: একটি কোম্পানি ১০০,০০০ টাকা রাজস্ব অর্জন করেছে এবং ভেরিয়েবল খরচ ৫০,০০০ টাকা।
হিসাব: কন্ট্রিবিউশন মার্জিন = (রাজস্ব - ভেরিয়েবল খরচ) / রাজস্ব = (১০০,০০০ - ৫০,০০০) / ১০০,০০০ = ৫০%
আলোচনা: কন্ট্রিবিউশন মার্জিন ৫০% জানাচ্ছে যে ভেরিয়েবল খরচ বাদ দেওয়ার পরে কোম্পানি ৫০% লাভের জন্য প্রস্তুত।
৬. গ্রাহক লাইফটাইম ভ্যালু (CLTV) মার্জিন
মার্জিনের অর্থ: CLTV মার্জিন হল গ্রাহক অর্জনের খরচ বিয়োগ করার পরে উপলব্ধ গ্রাহক লাইফটাইম ভ্যালুর শতাংশ।
উদাহরণ: একজন গ্রাহকের লাইফটাইম ভ্যালু ১,০০,০০০ টাকা এবং গ্রাহক অর্জনের খরচ ২০,০০০ টাকা।
হিসাব: CLTV মার্জিন = (CLTV - CAC) / CLTV = (১,০০,০০০ - ২০,০০০) / ১,০০,০০০ = ৮০%
আলোচনা: CLTV মার্জিন ৮০% নির্দেশ করে যে একজন গ্রাহকের জন্য আয় করার পর ৮০% লাভ রয়েছে।
